নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারনের অপরাধে দায়েরকৃত মামলার পলাতক আসামী জালাল উদ্দিন (৩২) নামে এক যুবককে আটক করে র্যাব-৭।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাকে আটক করে।
বিজ্ঞাপন
আটককৃত মোঃ জালাল উদ্দিন (৩২), পিতাঃ- মৃত নুর আহমেদ, সাং তৈয়বের পাড়া, থানাঃ লোহাগাড়া।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, ভুক্তভোগী ভিকটিম বিবাহিত ও তার তিনটি সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের স্বামী চট্টগ্রাম শহরের একটি দোকানে চাকুরী করেন। ভিকটিম স্বামী সন্তান নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানা এলাকায় বসবাস করতেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভিকটিম তার ভাসুরের মেয়েকে নিয়ে বাড়ির বিদ্যুৎ বিল দেয়ার জন্য লোহাগাড়া থানার ফকিরহাট বাজারে যায়। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ শেষে ভিকটিম তার ভাসুরের মেয়েকে নিয়ে রিক্সাযোগে বাড়ি ফেরার পথে আনুমানিক ১১টার সময় এলাকার চিহ্নিত দুস্কৃতিকারী মোঃ কায়সার(৩৫) এবং জালাল উদ্দিন (৩৪) রিক্সা আটকিয়ে তাদেরকে জোরপূর্বক লোহাগাড়া থানাধীন বড়হাতিয়া এলাকায় একটি পরিত্যাক্ত টিনশেড ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর আসামী মোঃ কায়সার ভিকটিমকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং আসামী জালাল উদ্দিন তার মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। তখন ভিকটিমের ভাসুরের মেয়ে চিৎকার করলে জালালউদ্দিন তার মুখ চেপে ধরে এবং তাকেও তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও ধর্ষণের ভিডিওচিত্র মোবাইলে ধারণ করে। এরপর ধর্ষণকারীরা ভিকটিমদের পরিত্যাক্ত টিনশেড ঘরে ফেলে রেখে সেখান হতে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ধর্ষণকারীরা ভিকটিমদের হুমকী দেয় ধর্ষনের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তাদের মোবাইলে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে। ধর্ষকারীরা আসামীরা ভিকটিমের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবী করে এবং এই মর্মে হুমকি দেয় যদি টাকা না দেওয়া হয় তবে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র তারা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে। ভিকটিমরা ভয়ে আসামীদেরকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান করে।
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায় ধর্ষণকারী দুইজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-৩৯ তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/ ২০২০) তৎসহ ৩৪১ পেনাল কোড তৎসম ৮(১১)(৫) ২০১২ সাথের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন।
উল্লেখ্য মামলা রুজুুর পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে মামলার ১নং আসামী ধর্ষক মোঃ কায়সার গত ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ কতৃক গ্রেফতার হয় এবং পলাতক আসামী জালাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করার লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী জালাল উদ্দিন চট্টগ্রাম জেলার লোহাগড়া থানাধীন চুনতি এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল ৪ অক্টোবর আনুমানিক ৫টা ৩০ মিনিট বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ জালাল উদ্দিন (৩২), পিতাঃ- মৃত নুর আহমেদ, সাং তৈয়বের পাড়া, থানাঃ লোহাগাড়া, জেলাঃ চট্টগ্রামকে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামী বলে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।